অকেজো দু’হাত, পায়ে লিখেই দিল মাধ্যমিক পরীক্ষা! ছাত্রের ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ নেটিজেনদের

হাত থাকলেও তা স্বাভাবিক নয়। বাঁ হাত থাকে বুকের কাছে, ঝুলে থাকে ডান হাত। দুই হাতের প্রত্যেকটি আঙুল বাঁকা। ঠিকভাবে নড়ানো যায় না। এত শারীরিক সমস্যা সত্ত্বেও থামানো যায়নি চলতি বছরের মাধ্যমিক (Madhyamik Exam 2024) পরীক্ষার্থী খেরোয়াল হেমব্রমকে (Kheroyal Hembram)। বরং পায়ে লিখে পরীক্ষা দিচ্ছে সে। ইচ্ছাশক্তির কাছে যে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তুচ্ছ তা প্রমাণ করে দিল এই ছাত্র।

পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলির আড়শা ব্লকের সিরকাবাদ পঞ্চায়েতের কলাবনিতে বাড়ি খেরোয়ালের। চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সে। বাঁ পায়ের দুই আঙুল দিয়ে পেন ধরে জীবনের অন্যতম বড় পরীক্ষা দিচ্ছে খেরোয়াল। গোটা শরীরটাকে বেঁকিয়ে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে সে তাঁকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে পরীক্ষায় বসেছে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল (Viral) হয়ে গিয়েছে তাঁর ছবি।

Students giving Madhamik Exam 2024

পায়ে লিখে মাধ্যমিক দিল ছাত্র

দুই হাতের পাশাপাশি খেরোয়ালের মুখও বাঁকা। ঠিকভাবে কথা বলতে পারে না সে। তবে মাধ্যমিকের (Madhyamik) প্রথম পরীক্ষা তাঁর খারাপ হয়নি। সিরকাবাদ হাইস্কুলের এই ছাত্রের সিট পড়েছে আড়শা ব্লকের রাঙামাটি স্বামী শ্রদ্ধানন্দ বিদ্যাপীঠে। খেরোয়ালের (Kheroyal Hembram) বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। তাই সেখানকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে স্কুলের হস্টেলে তাঁকে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ পড়ুয়াদের স্কলারশিপ দিচ্ছে PNB, মিলবে ৩০০০০ টাকা! দেরি না করে আজই করুন আবেদন

রাঙামাটি স্বামী শ্রদ্ধানন্দ বিদ্যাপীঠের একটি ঘরে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে খেরোয়াল। প্রত্যেকে তাঁকে কিছু অর্থ সাহায্য করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ছাত্রের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের পর খেরোয়ালের জন্ডিস হয়। চিকিৎসা চলতে চলতেই তাঁর হাতের আঙুল বেঁকে যেতে শুরু করে। অকেজো হয়ে যায় দুই হাত, বেঁকে যায় মুখ। চিকিৎসা করাতে অন্যরাজ্যে নিয়ে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি।

Purulia Special Child Kheroyal Hembram gives exam with Leg

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও চালিয়ে গিয়েছে পড়াশোনা

জানা গিয়েছে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও হার মানেনি খেরোয়ালের পরিবার। কলাবনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁকে ভর্তি করা হয়। খেরোয়ালের যখন ৭ বছর বয়স তখন তাঁর মা ভারতী হেমব্রমের প্রচেষ্টায় বাঁ পা দিয়ে লিখতে শুরু করে সে। এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকায়নি পুরুলিয়া নিবাসী এই ছাত্র।

আরও পড়ুনঃ উচ্চশিক্ষার পথে বাঁধা হবে না অর্থ, মোটা টাকার এই স্কলারশিপে আবেদন করলেই হবে মুশকিল আসান

পুরুলিয়া জেলার নোডাল অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য কুণাল সেন খেরোয়ালের ইচ্ছাশক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ছাত্রের বাবা অজিত হেমব্রম বলেন, ছেলের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ওঁর ইচ্ছাশক্তির কথা ভেবে ওঁর পড়াশোনার জন্য আমরা লড়াই করে যাচ্ছি।

Leave a Comment