রিল্যায়েন্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানি (Mukesh Ambani) নন, এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির নাম হল গৌতম আদানি (Gautam Adani)! সম্প্রতি এমনটাই দাবি করা হয়েছে ব্লুমবার্গের তরফ থেকে। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় দেওয়ার পর থেকেই শেয়ারবাজারে ‘হাইস্পিডে’ বাড়তে থাকে আদানিদের শেয়ারের দাম।
আর এপার সম্পত্তির নিরিখে মুকেশ অম্বানিকে টপকে গেলেন গৌতম আদানি। আদায় করে নিলেন ভারত তথা গোটা এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির শিরোপা। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকায় আদানি (Adani Group) কর্তা দ্বাদশ অর্থাৎ ১২ নম্বর স্থানে রয়েছে। অপরদিকে রিল্যায়েন্স কর্তা আছেন ত্রয়োদশ তথা ১৩ নম্বরে। অর্থাৎ মুকেশ অম্বানির থেকে এগিয়ে আছেন গৌতম আদানি (Gautam Adani)।
ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির শিরোপা দখল গৌতম আদানির!
হিন্ডেনবার্গের ধাক্কা সামলে ফের স্বমহিমায় হাজির হয়েছেন গৌতম আদানি। গত বছর এই মার্কিন শর্ট সেলার ফার্মের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, গৌতম আদানির (Gautam Adani) সংস্থা শেয়ারের দামে কারচুপি করছে। শুধু তাই নয়, কোম্পানির লাভের খতিয়ানেও গরমিল করা হচ্ছে। নিজেদের এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কিছু নথিপত্রও প্রকাশ্যে আনেন তাঁরা। যা নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায় ভারতের রাজনৈতিক মহলও।
আরও পড়ুনঃ চড়া সুদ, অল্প সময়েই দুর্দান্ত রিটার্ন, SBI-র এই মালামাল স্কিমে ইনভেস্ট না করলে পস্তাবেন!
বিরোধী দলগুলি এই বিষয়টি নিয়ে সরব হন। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অনেকে বেআইনিভাবে ব্যবসার অভিযোগও আনে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের শাসক দল এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করা হয়। সব মিলিয়ে ব্যাপক ধাক্কা খায় আদানি সংস্থা। গৌতম আদানির (Gautam Adani) কোম্পানির শেয়ারের মূল্য প্রায় ৬০% মতো পড়ে যায়। অনেক লগ্নিকারী সংস্থা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া শুরু করে।
হিন্ডেনবার্গ ধাক্কা সামনে ঘুরে দাঁড়ালেন গৌতম আদানি!
অন্যদিকে বিরোধীদের ক্রমাগত চাপের মুখে পড়ে আদানি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় SEBI। এরপর বেশ কিছু বিরোধী দলের তরফ থেকে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করে তদন্ত এবং সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। এই নিয়ে উত্তাল হয় সংসদের উভয় পক্ষ। যদিও কেন্দ্রের তরফ থেকে এই দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর বিরোধীরা সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে আদানি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়, আদানি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য SEBI-ই যথেষ্ট। আলাদা করে কোনও কমিটি গঠন করে তদন্ত করার কোনও প্রয়োজন নেই। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তদন্তে গৌতম আদানির সংস্থাকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে SEBI-এর তরফ থেকে। বর্তমানে আরও দু’টি বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ মাস গেলে লাখ টাকা আয়! হেভি ডিমান্ডের এই ব্যবসা শুরু করলে একমাসেই হবেন মালামাল
গৌতম আদানির মোট সম্পত্তির পরিমাণ কত?
সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে এই রায় ঘোষণা করার পর আনন্দে ফেটে পড়ে আদানি সংস্থা। বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, সাম্প্রতিককালে তাঁদের বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের তরফ থেকে এই রায় ঘোষণা করার পর আদানি গোষ্ঠীর প্রতি ফের বিনিয়োগকারীদের রায় ফিরতে শুরু করে। এরপর থেকেই শেয়ারবাজারে চড় চড় করে বাড়তে শুরু করে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের মূল্য।
ব্লুমবার্গের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে আদানি কর্তা গৌতমের সম্পত্তির পরিমাণ ৯৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অপরদিকে রিল্যায়েন্স কর্তা মুকেশের সম্পত্তির পরিমাণ হল ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে ব্লুমবার্গের তরফ থেকে প্রকাশিত রিপোর্টে গৌতম আদানিকে এই মুহূর্তে ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির শিরোপা দেওয়া হলেও বেশ কিছু সম্পদ পরীক্ষক সংস্থা তাদের এই রিপোর্ট মানতে রাজি নয়। তাদের বক্তব্য, শেয়ারবাজারে ঘুরে দাঁড়িয়ে খুব শীঘ্রই ফের পুরনো অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছেন গৌতম আদানি। তবে মোট সম্পদের নিরিখে তিনি এখনও মুকেশ অম্বানিকে ছাপিয়ে যেতে পারেননি।